নাগরিক পার্টির অনুরোধে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করলো ছাত্রদল

প্রকাশ :

সংশোধিত :

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঘোষণা দিয়েছে, আগামী ৩ আগস্টের পূর্বঘোষিত ছাত্র সমাবেশটি পূর্ব নির্ধারিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পরিবর্তে শাহবাগে অনুষ্ঠিত হবে।

আজ বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “আমরা অত্যন্ত উদারনৈতিক রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সমাবেশের স্থান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে যদি রাজধানীর ব্যস্ত সড়কে কিছুটা জনদুর্ভোগ হয়, আমরা আগামভাবে নগরবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। আশা করি, জনগণ বিষয়টি বুঝবেন এবং আমাদের এই সিদ্ধান্তের পেছনে থাকা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিকে মূল্যায়ন করবেন।”

রাকিব আরও জানান, জুন মাসেই তারা ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে সমাবেশের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেন এবং ২৬ জুন অনুমতিও পান। কিন্তু পরে গণমাধ্যমে জানতে পারেন, একই দিনে একই স্থানে জাতীয় নাগরিক পার্টিও সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপর পার্টির নেতারা ব্যক্তিগতভাবে ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্থান পরিবর্তনের অনুরোধ জানান এবং ছাত্রদলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেন।

তিনি বলেন, “এমন একটি কর্মসূচি ঘোষণার পর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে তা হঠাৎ অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া সহজ নয়। তবুও আমরা সব পক্ষের প্রতি সম্মান দেখিয়ে, সংঘাত এড়াতে এবং রাজনৈতিক সহাবস্থানের সংস্কৃতিকে অক্ষুণ্ন রাখতে আমাদের সমাবেশের স্থান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

রাকিব বলেন, “২০০৮ সালের পর থেকে দেশের শিক্ষাঙ্গনগুলোতে রাজনৈতিক সহাবস্থানের পরিবেশ ধ্বংস হয়ে গেছে। গত ১৬ বছর ধরে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রাণ, ক্যারিয়ার ও পরিবার ত্যাগ করে ক্যাম্পাসে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ করে আসছে। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পরও ছাত্রদল কোনো হল দখল করেনি, কাউকে জোর করে কর্মসূচিতে নিয়ে যায়নি। বরং শান্তিপূর্ণ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।”

তিনি অভিযোগ করেন, “গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও ছাত্রদলের অবদানকে উপেক্ষা করা হয়েছে। গুজব ও অপপ্রচারে আমাদের কোণঠাসা করার চেষ্টা করা হয়েছে। অনলাইনেও কুৎসিত আক্রমণ হয়েছে। তবুও আমরা শান্তি ও সহাবস্থানের রাজনীতিতে আস্থাশীল থেকেছি এবং থাকবো। এই সমাবেশের স্থান পরিবর্তন তারই প্রমাণ।”

তিনি বলেন, “আমরা চাইলে শহীদ মিনারেই সমাবেশ করতে পারতাম, কিন্তু আমরা সংঘাত নয়, শান্তি ও সহনশীলতার বার্তা দিলাম। আশা করি, যারা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা অর্জনের একক দাবিদার হতে চায়, তারা আমাদের উদারতার বার্তা বুঝবে এবং সুস্থ ধারার রাজনীতিতে ফিরবে।”

ছাত্রদল সভাপতি আরও জানান, “আমরা চাই দেশের শিক্ষাঙ্গনগুলোতে ইতিবাচক, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি গড়ে উঠুক। উদারতা, সহনশীলতা ও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাই হবে আমাদের ভবিষ্যৎ পথচলার মূল চালিকাশক্তি।”

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহইয়া, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম, সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সর্বশেষ খবর