পৃথিবী জুড়ে নববর্ষের অদ্ভুত সব রীতিনীতি
প্রকাশ :
সংশোধিত :
পহেলা জানুয়ারি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে বছরের প্রথম দিন। সারা বিশ্বে ব্যাপক আয়োজন করে এ দিনটি পালিত হয়। যদিও বেশিরভাগ জায়গায় নববর্ষ উদযাপন হয় নির্দিষ্ট কিছু ধরাবাঁধা নিয়মে, যেমন আতশবাজি পোড়ানো এবং বন্ধু ও পরিবারের সাথে সময় কাটানো। তবে বিশ্বের অনেক দেশে নববর্ষ উদযাপনের কিছু রীতি রয়েছে যা বেশিরভাগ মানুষের কাছে অদ্ভুত বলে মনে হতে পারে।
ফিলিপাইনে শুধুমাত্র গোলাকার জিনিস ব্যবহার করা
ফিলিপাইনে নববর্ষের আগের দিনটি শুধুমাত্র গোলাকার আইটেম (যেমন ফল) ব্যবহার করা হয়। গোল আকৃতিটি ফিলিপিনো সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধির প্রতীক। নববর্ষের আগের রাতে টেবিলে ১২টি ভিন্ন গোলাকার ফল রাখা হয়, যার প্রতিটি পরবর্তী বছরের একটি মাসের প্রতিনিধিত্ব করে। তারা বিশ্বাস করে এর মাধ্যমে পরবর্তী ১২ মাসে জীবনে সমৃদ্ধি আসবে।
গুয়াতেমালায় পয়সা নিক্ষেপ
গুয়াতেমালার বাসিন্দাদের জন্য মধ্যরাতে পয়সা নিক্ষেপ করা রীতিমতো ঐতিহ্য। দিনটিতে গুয়াতেমালান জনগণ ১২টি পয়সা নিয়ে, বাড়ির বাইরে কোনো রাস্তায় দাঁড়ায়। এরপর নিজের অবস্থানের পিছনে ছুড়ে ফেলে দেয়। তাদের বিশ্বাস এটি তাদের আগামী বছরের সম্পদ বৃদ্ধি এবং সমৃদ্ধি নিশ্চিত করবে।
ডেনমার্কে প্লেট ভাঙ্গা
ডেনমার্কে বন্ধুত্বের চিহ্ন হিসাবে পুরানো প্লেট সংরক্ষণ করা হয় এবং নববর্ষের প্রাক্কালে প্রিয় বন্ধুর বাড়ির দোরগোড়ায় সেগুলো ভেঙ্গে ফেলতে হয়। এটি ঐতিহ্য। ড্যানিশরা ধ্বংসাবশেষ সাফ করে না এটিকে স্তূপ হতে দেয়, বড় স্তূপ জনপ্রিয়তার লক্ষণ।
রাশিয়ার জ্বলন্ত শুভেচ্ছা
নববর্ষের প্রাক্কালে রাশানরা একটি কাগজের টুকরোতে আসন্ন বছরের জন্য একটি ইচ্ছা-চিরকুট লিখে শ্যাম্পেনের গ্লাসে রাখার আগে ইচ্ছা-চিরকুটটিকে আগুন ধরিয়ে দেয়।
মধ্যরাতের ১ মিনিটের আগে তাদের অবশ্যই এই ছাই পানীয়তে মিশিয়ে পান করতে হবে। তারা বিশ্বাস করে এর ফলে তাদের আশা পূরণ হবে।
আয়ারল্যান্ডে খাবার টেবিলে একটি অতিরিক্ত আসন রাখা
আইরিশদের বেশ কিছু নববর্ষের ঐতিহ্য রয়েছে, যেমন খারাপ ভাগ্য এবং মন্দ আত্মাকে দূরে রাখা। এরজন্য তারা ঘরের বাইরে রুটি রাখে এবং একটি সদ্য পরিষ্কার ঘর দিয়ে নতুন বছর শুরু করে। তবে সবচেয়ে সুপরিচিত রীতি হলো আগের বছরে হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনের জন্য খাবার টেবিলে একটি অতিরিক্ত প্লেট বা বসার আসন রাখা।
রোমানিয়াতে ভালুকের কস্টিউম পরা
রোমানিয়াতে ৩১ ডিসেম্বরে ভাল্লুকের কস্টিউম পরে চারপাশে ঘুরে বেড়ানো এবং নাচা ঐতিহ্য। ভাল্লুক তাদের কাছে একটি পবিত্র প্রাণী, এই বিশ্বাসের মধ্যে এই ঐতিহ্য নিহিত।
কয়েক শতাব্দী আগে তারা সত্যিকারের ভাল্লুকের গলায় দড়ি পরিয়ে তা নিয়ে রাস্তায় হাঁটতো। রোমানিয়ানরা বিশ্বাস করে যে ভাল্লুক বিগত বছরের খারাপ আত্মাদের তাড়াবে। সৌভাগ্যবশত এখন সত্যিকারের ভাল্লুকের পরিবর্তে ভালুকের কস্টিউম পরে নাচা হয়।
জাপানে ১০৮টি ঘণ্টা বাজানো
৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাতে পুরো জাপান জুড়ে ১০৮টি ঘণ্টা বেজে ওঠে। এই আচারটিকে জয়া-নো-কানে বলা হয় এবং বৌদ্ধ পুরোহিতরা ঘণ্টাটি বাজায়। ঘন্টার সংখ্যাগুলো বৌদ্ধধর্মে পার্থিব ইচ্ছার প্রতিনিধিত্ব করে ও স্বপ্ন পূরণ করার আশা নিয়ে বাজানো হয়। জাপানিজ টিভি বা রেডিওতে ঘন্টা বাজানোর আচারটি সম্প্রচার করা হয়।