দাঁতের সৌন্দর্যে ভিনিয়ার

প্রকাশ :

সংশোধিত :

একটি সুন্দর হাসি কেবল মুখের সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করে না, আত্মবিশ্বাসও বাড়ায়। তবে অনেকেই দাঁতের রং, আকার কিংবা ফাঁকাভাব নিয়ে অস্বস্তিতে থাকে। এই সমস্যার সমাধান হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভিনিয়ার চিকিৎসা। দক্ষ চিকিৎসক এই চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীদের হাসিতে এনে দিচ্ছেন কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন।

ভিনিয়ার কী: ভিনিয়ার হলো দাঁতের সামনের অংশে বসানো একধরনের পাতলা সিরামিক বা কম্পোজিট শিট, যা দাঁতের রং, আকৃতি ও অবস্থান পরিবর্তনে সহায়তা করে। এটি মূল দাঁতের গঠন পরিবর্তন না করেই একটি নান্দনিক এবং প্রাকৃতিক চেহারা দেয়।

কাদের জন্য ভিনিয়ার উপযোগী: যাদের দাঁতে হলদে দাগ, সামান্য আঁকাবাঁকা সমস্যা, ছোট বা ভাঙা দাঁত কিংবা সামান্য ফাঁকাভাব রয়েছে, তারা ভিনিয়ার চিকিৎসা নিতে পারেন। বিশেষ করে যারা ক্যামেরার সামনে থাকেন বা চাকরি ও সমাজে আত্মপ্রকাশের ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস চান, তাদের জন্য এটি একটি কার্যকর ও নিরাপদ সমাধান।

ভিনিয়ার বসানোর প্রক্রিয়া: ভিনিয়ার বসানোর প্রক্রিয়া সাধারণত দুই ধাপে সম্পন্ন হয়। ধাপ দুটি হলো প্রাথমিক মূল্যায়ন ও দাঁতের প্রস্তুতি এবং ভিনিয়ার স্থাপন। প্রাথমিক মূল্যায়ন ও দাঁতের প্রস্তুতি ধাপে রোগীর মুখগহ্বর পরীক্ষা করে দাঁতের গঠন বুঝে সামান্য পরিমাণ এনামেল ঘষে দেওয়া হয়। ভিনিয়ার স্থাপন ধাপে ল্যাবরেটরিতে বানানো কাস্টমাইজড ভিনিয়ার দাঁতের উপর স্থাপন করা হয় এবং বন্ডিং ম্যাটেরিয়ালের সাহায্যে সেটি চূড়ান্তভাবে বসানো হয়। সার্জারি ছাড়াই এই চিকিৎসা সম্পন্ন হয় এবং সাধারণত ১-২ সেশনেই শেষ হয়ে যায়।

ভিনিয়ারের সুবিধা: এ পদ্ধতি দাঁতের রঙ উন্নত করে, ভাঙা বা ছোট দাঁতের আকৃতি ঠিক করে, ফাঁকাভাব ঢেকে দেয়, ১৫-৩০ বছর পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে, প্রাকৃতিক ও চকচকে হাসি এনে দেয়, এবং নন-ইনভেসিভ পদ্ধতি হওয়ায় কোনও ব্যথা লাগে না।

সতর্কতা ও যত্ন: ভিনিয়ার বসানোর পর সঠিকভাবে যত্ন না নিলে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। এজন্য রোগীদের কতগুলো পরামর্শ মেনে চলতে হয়। যেমন দাঁত দিয়ে বাদাম বা বরফ চিবানো এড়ানো প্রতিদিন দু’বার নরম ব্রাশ দিয়ে ব্রাশ করা, নিয়মিত চেকআপ ও স্কেলিং করনো, দাঁতের উপর অতিরিক্ত চাপ বা ঘষাঘষি এড়ানো এবং ধূমপান, চা-কফি কম খাওয়া।

ভিনিয়ার চিকিৎসা শুধু দৃষ্টিনন্দন নয়, এটি দাঁতের কার্যকারিতাও বজায় রাখে। তবে রোগীর মুখ ও দাঁতের গঠন অনুযায়ী পরিকল্পিতভাবে এই চিকিৎসা দিতে হয়। অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও মানুষ এখন তাদের হাসির ব্যাপারে অনেক সচেতন, তাই ভিনিয়ারের জনপ্রিয়তা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।  বাংলাদেশে ভিনিয়ার চিকিৎসার সুযোগ সীমিত হলেও এই সেবাকে আরও সহজলভ্য করতে কাজ করা হচ্ছে।  দাঁতের রং, আকৃতি বা সামান্য ত্রুটি অনেক সময় ব্যক্তিত্বের ওপর প্রভাব ফেলে। ভিনিয়ার চিকিৎসা এই সমস্যার আধুনিক, ব্যথাহীন এবং টেকসই সমাধান। সঠিক পরিকল্পনা ও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ভিনিয়ার করালে আপনি পেতে পারেন আপনার স্বপ্নের হাসি — আস্থা ও সৌন্দর্য।

 

- ডা. মো. ইমরান হোসেন বনানীর ডেন্টাল ভিউ অর্থোডন্টিকস অ্যান্ড ইমপ্লান্ট সেন্টারের চিফ কনসালট্যান্ট। imran92122@gmail.com – এই ই-মেইল ঠিকানায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে।

সর্বশেষ খবর