বন্ড মার্কেটের পুনরুজ্জীবিত করা প্রয়োজন

রিপোর্ট

প্রকাশ :

সংশোধিত :

বাংলাদেশের বন্ড মার্কেট অমিত সম্ভাবনাময় একটি ক্ষেত্র হলেও এটি এখনও পরিপূর্ণভাবে বিকাশ লাভ করেনি। এর পেছনে রয়েছে বেশ কিছু কারণ। কর্পোরেটগুলোতে সুশাসনের অভাব, সচেতনতার অভাব, তথ্য-উপাত্তে কারসাজি, বিনিয়োগকারীদের উপর  অতিরিক্ত করের বোঝা এবং নিয়মকানুনের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত না হওয়া - এগুলোকে প্রধান কারণ হিসাবে মনে করা হয়। টেকসই বন্ড মার্কেটের অনুপস্থিতি বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে। কেননা বাংলাদেশে  অর্থায়নের প্রাথমিক খাত হিসাবে ব্যাংককেই মনে করা হয়। ব্যাংকের ওপর মাত্রারিক্ত চাপ খেলাপি ঋণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে, সর্বোপরি দেশের সার্বিক অর্থায়ন প্রক্রিয়াকে ঝুঁকির সামনে দাঁড় করিয়েছে। সম্প্রতি ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস ও ওয়াটারমার্ক ইনক-এর যৌথ উদ্যোগে এক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়, যেখানে বন্ড মার্কেটের বিকাশের পথে মূল প্রতিবন্ধকতাগুলো এবং এই খাতের সম্ভাবনাময় দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত বিশেষজ্ঞরা বন্ড মার্কেটকে কার্যকর করতে এর পুরো সিস্টেমের পুনর্গঠনের উপর গুরুত্বারোপ করেন, যাতে করে বন্ড মার্কেট বিনিয়োগকারীদের জন্য আকর্ষণীয় ক্ষেত্র হয়৷ তাদের উত্থাপিত পরামর্শের মধ্যে রয়েছে কর ব্যবস্থার পুনর্গঠন, নিয়মকানুনের যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক মানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নিয়মকানুন প্রণয়ন করা।  এগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশি -বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পর্যাপ্ত বিনিয়োগে আগ্রহী হবে।

বন্ড মার্কেট হলো এমন একটি মার্কেটপ্লেস যেখানে ক্রেতা ও বিক্রেতা ঋণপত্রের বিনিময়ে বন্ডের আদান-প্রদান করে।এটি আমাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি ঋণগ্রহীতাকে দীর্ঘমেয়াদী কোনো প্রকল্পে অর্থায়নের সুযোগ দেয়। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীর পোর্টফলিও সমৃদ্ধ করতেও ভূমিকা রাখে এটি। বাংলাদেশে বন্ড মার্কেট এখনও জনপ্রিয়তা লাভ করেনি এবং দেশের অর্থনীতিতে এর সম্ভাবনাময় দিকটি এখনও অনুম্মোচিত। আলোচনার মুখ্য বক্তা ইউসিবি ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের মোট জিডিপিতে কর্পোরেট বন্ডের অবদান মাত্র ০.১৯ শতাংশ। যেখানে সরকারি বন্ডে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২-১৩ শতাংশ সুদের হার নির্ধারিত থাকে, সেখানে কর্পোরেট বন্ডগুলোতে মেয়াদ শেষে বিনিয়োগকারীদের মুনাফার পরিমাণ আরো আকর্ষণীয় হওয়া উচিত। বন্ড মার্কেটের সম্ভাবনার দিক উন্মোচিত করতে এর নিয়ন্ত্রক ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়নের ওপর গুরুত্ব প্রদান এবং এটি প্রণয়নে আন্তর্জাতিক মান প্রণয়নের উপর জোর দেন তিনি।

দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক বলেন, যেহেতু বন্ড মার্কেটে সুদের হার সন্তোষজনক, তাই বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি একটি সুরক্ষিত বিনিয়োগ। পাশাপাশি তিনি সরকারি ও বেসরকারি বন্ডের সুষ্ঠু লেনদেন নিশ্চিতে সেকেন্ডারি মার্কেটের পুনর্গঠনের উপর গুরুত্ব দেন।

যেহেতু বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনা পুনর্গঠনের উদ্যোগ হাতে নিয়েছে, সেখানে বন্ড মার্কেট পুনরুজ্জীবিত করাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। একটা শক্তিশালী বন্ড মার্কেট মূলধনের গতিশীলতা বাড়াবে, ব্যাংকের উপর চাপ কমাবে এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্পগুলোতে স্থায়ী অর্থায়নের সুযোগ নিশ্চিত করবে। দেশের অর্থনীতিতে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সম্ভাবনাময় বন্ড মার্কেটের বিকাশের বাঁধাগুলো দূর করার এখনই উপযুক্ত সময়।

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে পৌনে পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ফেরি চলাচল আবারও স্বাভাবিক হয়েছে। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ৭টার দিকে কুয়াশা কাটলে ফেরি চলাচল পুনরায় শুরু করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)।

বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিট হতে কুয়াশার ঘনত্ব বৃদ্ধি পেলে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শুক্রবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে চলাচল স্বাভাবিক হয়। ২০ মিনিট ফেরি চলাচল স্বাভাবিক থাকার পর সকাল ৬টা ৩০ মিনিট থেকে পুনরায় ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সকাল সোয়া ৭টা থেকে আবারও ফেরি চলাচল শুরু হয়।

বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. খোরশেদ আলম বলেন, কুয়াশা কেটে যাওয়ার পর সকাল সোয়া ৭টা থেকে পুনরায় ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। বর্তমানে যাত্রী ও যানবাহন নির্বিঘ্নে পারাপার করছে। বর্তমানে এই নৌরুটে ছোট বড় ১৭টি ফেরি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর