প্রথম ধাপে ৬ বিলিয়ন ডলারের নতুন বিনিয়োগের উদ্যোগ

বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পে নতুন অর্থদাতা দক্ষিণ কোরিয়া

প্রকাশ :

সংশোধিত :

বাংলাদেশের প্রায় দুই ডজন প্রস্তাবিত উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া ঋণ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ফলে প্রাথমিকভাবে দেশটি থেকে  ৮১ হাজার ৬৭০ কোটি টাকার (প্রায় ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) ঋণ আশা করছে বাংলাদেশ সরকার। 

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফরে এই আগ্রহ প্রকাশ করে। তারা বলেন, “দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশে উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ বাড়ানোর কথা ভাবছে। তবে তারা বর্তমানে বড় আকারের মেগা প্রকল্পে অর্থায়নে বেশি আগ্রহী।”

গত ২২ জুলাই দক্ষিণ কোরিয়ার ভূমি, অবকাঠামো ও পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং কোরিয়া এক্সিম ব্যাংকের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ইআরডির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে। সেখানে তারা সম্ভাব্য বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করে।

এই বৈঠকের আগে ইআরডি নতুন সরকার গঠনের আগেই উন্নয়ন কার্যক্রমে গতি আনার উদ্দেশ্যে সম্ভাব্য প্রকল্পগুলোর একটি তালিকা তৈরিতে দেশের প্রায় তিন ডজন বাস্তবায়নকারী সংস্থার কাছ থেকে প্রকল্প প্রস্তাব চেয়ে পাঠায়।

তবে ইআরডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া—দুই দেশেই চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এই বিনিয়োগ বাস্তবায়নের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এক কর্মকর্তা বলেন, “বাংলাদেশের মতো দক্ষিণ কোরিয়াও এখন রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।”

কোরিয়া এক্সিম ব্যাংকের ঋণের সুদ হার বাণিজ্যিক হারে নির্ধারিত হবে। তবে ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ডের (ইডিসিএফ) আওতায় যেসব ঋণ দেবে, সেগুলোর সুদের হার ২০২২ সালের চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত ১ শতাংশের মধ্যে থাকবে।

অপর এক কর্মকর্তা বলেন, “এখন যদি প্রকল্প অনুমোদনও পায়, তবুও অর্থ ছাড় করানো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে থাকবে। বর্তমানে কিছু প্রকল্প কোরিয়ান অর্থায়নের ভিত্তিতে বিবেচনাধীন রয়েছে, আবার কিছু প্রকল্পের জন্য কোরিয়ান পদ্ধতিতে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে।”

যেসব প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই প্রায় শেষ পর্যায়ে, সেগুলোর ক্ষেত্রে এখন চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সাম্প্রতিক বৈঠকে প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি, দুর্বলতা এবং বাস্তবায়নে বাধাসমূহ নিয়েও আলোচনা হয়।

এছাড়া, প্রকল্প অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের দিক থেকে কোথায় দেরি হচ্ছে বা কোন পর্যায়ে এখনো চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়নি, সেই বিষয়েও আলোচনা হয়।

বৈঠকে উপস্থিত এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, দক্ষিণ কোরিয়া আগে ছোট আকারের প্রকল্পে অর্থায়ন করলেও বর্তমানে তারা মেট্রোরেল লাইন-৪ ও ৫, রেলওয়ের রোলিং স্টক সরবরাহ এবং বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণের মতো বড় প্রকল্পে অর্থায়নে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সাল থেকে কোরিয়া এক্সিম ব্যাংকের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন করে আসছে। এ যাবৎ কোরিয়ার বেশিরভাগ সহযোগিতাই স্বল্পসুদে ঋণের  মাধ্যমে এসেছে। 

Jahid.rn@gmail.com

সর্বশেষ খবর