মোরেলগঞ্জে পানগুছি নদীতে সেতুর অভাবে দুর্ভোগে ৫ লাখ মানুষ

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ও মৎস্যভান্ডার নামে খ্যাত বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলবর্তী বাগেরহাটের নদী তীরবর্তী উপজেলা মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা। মোরেলগঞ্জে পানগুছি নদীতে ব্রিজ না থাকায় সুন্দরবনের উপকূলের মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে পারাপার হতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে প্রতিদিন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন প্রায় ৫ লাখ মানুষ। এছাড়া ট্রলার মালিকদের উদাসীনতায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানীয়রা অবিলম্বে ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

নদী পারাপারে নৌযানটি যাত্রী নিতে পারে প্রায় ৩০ জন, কিন্তু ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ মানুষ নিয়ে প্রতিনিয়ত ঝুঁকিপূর্ণভাবেই চলছে বাগেরহাটের পানগুছি নদীর ইঞ্জিনচালিত ট্রলারগুলো। স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্রিজ না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে পারাপার হতে হয় তাদের। প্রায়ই ট্রলার মালিকদের স্বেচ্ছাচারিতায় অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করায় ঘটছে দুর্ঘটনা। তাই জনদুর্ভোগ এড়াতে দ্রুত পানগুছি নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা।

মোরেলগঞ্জ উপজেলা বিএনপি সভাপতি শহিদুল হক বাবুল বলেন, “মোরেলগঞ্জ, রামপাল, মোংলা, শরণখোলা, এমনকি মঠবাড়িয়া ও ভান্ডারিয়া এলাকার মানুষ এ পথে চলাচল করেন। তাই ব্রিজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, পানগুছি নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণের প্রকল্প ২০২১ সালের একনেক সভায় অনুমোদিত হয়েছে। একই বছরের জুনে প্রকল্পটির প্রশাসনিক আদেশ জারি হয় এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে এটি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) অন্তর্ভুক্ত করা হয়। চলতি অর্থবছরেও ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে এবং একটি প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসনের তথ্যমতে, গত ১২ বছরে পানগুছি নদীতে প্রায় অর্ধশত ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে মারা গেছেন প্রায় ৩০ জন। সর্বশেষ গত ২৮ মার্চ ৮০ জন যাত্রী নিয়ে একটি ট্রলার ডুবির ঘটনায় নারী-শিশুসহ ১৮ জন মৃত্যুবরণ করেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, অবিলম্বে ব্রিজ নির্মাণ না হলে আরও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেতুর অভাবে প্রায় ৫ লাখ মানুষ, বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা, প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পানগুছি নদী পারাপার করছেন। তাই নিরাপদ যাতায়াত ও জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত সেতু নির্মাণের পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।